সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদর্শিত একমাত্র পদ্ধতি হচ্ছে:
আল্লাহর সর্বশেষ নাবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের
ভিত্তিতে আবু জাহিল গংদের দ্বারা পরিচালিত সমাজ মক্কায় লোকদেরকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনাসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে
আল্লাহকেই একমাত্র রব-সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তৃত্বের মালিক মানার এবং তাঁরই
দাসত্ব, তাঁরই আইনের আনুগত্য এবং আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নেতৃত্বের আনুগত্য
করার দাওয়াতের মাধ্যমে সকল প্রকার বিরোধীতা ও ষড়যন্তের মোকাবিলায় ছবর ও ক্ষমার নীতিতে অটল থেকেই তাঁর নিজ
নেতৃত্বে “ইসলামী সমাজ গঠন”এর চূড়ান্ত প্রচেষ্টার প্রেক্ষিতে দাওয়াত কবুলকারী একদল ঈমানদার, চরিত্রবান লোক গঠন হয়।
ইতিমধ্যে মদীনায়ও বহুলোক দাওয়াত কবুল করে রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্ব মেনে নেয়। ফলে
মদীনা’য় ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের অনুকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতি তৈরী হয়। রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর
নির্দেশে হিজরত করে মদীনা’য় আসেন। মদীনাতে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছায় মানব রচিত ব্যবস্থার ধারক-বাহক
নেতৃত্বের পতন ঘটে আর তখনই আল্লাহর বিশেষ সাহায্যে মদীনা’য় আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর সার্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলাম সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তী ১০ বছরে পরিপূর্ণতা লাভ করে।
আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর ইন্তিকালের পর সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না
থাকাকালীন আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী, নিঃস্বার্থ, ত্যাগী ও অর্থ সম্পদ কুরবানকারী, সৎকর্মশীল এবং আল্লাহর রাসূল
হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যথাযথ অনুসরণ ও অনুকরণে ঈমান, ইসলামের অঙ্গীকার ও ইসলাম
বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের দাওয়াত দানকারী আমীরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল্লাহরই সর্বশেষ নাবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা করতে হবে। এটাই আল্লাহর ক্ষমা
ও জান্নাত লাভের উপায়।
সমাজ ও রাষ্ট্র যখন মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের অধীনে থেকে মানব রচিত ব্যবস্থার আনুগত্যের ভিত্তিতে গঠিত
ও পরিচালিত হয়, তখন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্বের প্রতি ঈমান
-এর দাওয়াত এবং কেবলমাত্র তাঁরই দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনার অঙ্গীকার ও তাঁরই মনোনীত সর্বশেষ নাবী ও রাসূল
হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণ-এর অঙ্গীকারের দাওয়াত সমাজ ও
রাষ্ট্রের সকল মানুষের কাছে পেশ করতে হবে। দাওয়াত কবুলকারীদের নিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট গ্রহণযোগ্য হক্ব
নেতার নেতৃত্বে সমাজ গঠন করতে হবে। এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক চেষ্টার মাধ্যমে সমাজ গঠন প্রচেষ্টা এগিয়ে চলতে থাকবে। সমাজ
গঠন-এর প্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সকল শক্তির সকল প্রকার বিরোধীতা ও ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করার দায়িত্ব সৃষ্টিকর্তা
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের উপর ছেড়ে দিয়ে উত্তম ধৈর্য্য, ক্ষমা ও আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করার নীতিতে অটল এবং ঈমান-এর
উপর দৃঢ় থেকে ছালাত‘এর মাধ্যমে আল্লাহর বিশেষ সাহায্যের জন্য তাঁরই নিকট দোয়া করতে থাকতে হবে। এভাবে ঈমান-এর
উপর দৃঢ় থেকে ঈমানদার, সৎকর্মশীল ও ত্যাগী হক্ব নেতার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজ গঠনের কার্যক্রম সর্বাত্মক চেষ্টার
মাধ্যমে চালিয়ে যেতে থাকলে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার অনুকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতি তৈরী হবে এবং আল্লাহ রাব্বুল
আলামীনের বিশেষ ক্ষমতা ও কৌশলের প্রেক্ষিতে মানব রচিত ব্যবস্থার ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত নেতৃত্বের পতন ঘটবে আর
তখনই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রতি ঈমান আনয়নকারী সৎকর্মশীলদেরকে জমিনে খিলাফাত-রাষ্ট্রীয় শাসন
ক্ষমতা দান করবেন।
সুরা নূর’এর ৫৫ আয়াতে ঈমানদার সৎকর্মশীলদেরকে খিলাফাত- রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা দানের ব্যাপারে আল্লাহ তাঁর এ ওয়াদা’র
কথাই জানিয়ে দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ফরমান- “আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান
আনবে ও সৎ কাজ করবে, তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা (খিলাফাত) দান
করবেনযেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন”। এটাই সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহ প্রদত্ত্ব একমাত্র জীবন
ব্যবস্থা ইসলাম প্রতিষ্ঠার আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রদর্শিত একমাত্র পদ্ধতি।
ইসলামী সমাজ একমাত্র আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আদর্শবাদী আপোষহীন প্রতিষ্ঠান:
ইসলামী সমাজ একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্বের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস-ঈমান আনয়নের ঘোষণা,
কেবলমাত্র তাঁরই দাসত্ব, তাঁরই আইনের আনুগত্য ও উপাসনা এবং তাঁরই মনোনীত সর্বশেষ নাবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণের অঙ্গীকারের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে। ইসলামী
সমাজ আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম
প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বাত্মক আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকল প্রকার উগ্রতা, জঙ্গীতৎপরতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ইসলামী
সমাজ-এর দৃঢ় অবস্থান। ইসলামী সমাজ সকল প্রকার সামপ্রদায়িকতার উর্ধে উঠে ক্ষমা ও উত্তম ধৈর্য্যর নীতিতে অটল থেকে
একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্বের ভিত্তিতে মানুষের সার্বিক কল্যাণে ঈমানী দায়িত্ব পালন করে
যাচ্ছে। সুতরাং ইসলামী সমাজ” সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আদর্শবাদী আপোষহীন প্রতিষ্ঠান।
মানুষের সার্বভৌমত্বের অধীনে নির্বাচন কিংবা বোমাবাজি ও সশস্ত্র সংগ্রাম এ দু‘টোর কোনটাই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম
প্রতিষ্ঠার আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) প্রদর্শিত পদ্ধতি নয়। মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মেনে
মানুষের মনগড়া আইনের অধীনে থেকে জনগণ‘কে সকল ক্ষমতার উৎস মেনে” ভোট ও নির্বাচন ইসলাম প্রতিষ্ঠার আল্লাহর
রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রদর্শিত পদ্ধতি নয়। এ পদ্ধতি গ্রহণ করলে ঈমান-এর মূল
বিষয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সার্বভৌমত্বে শির্ক এবং তাঁর আইন-বিধানে কুফুরী করা হয়। এ শির্ক ও
কুফুরীর পথে আল্লাহর রহমত ও বিশেষ সাহায্য আসবে না, আসতে পারেনা; ফলে ইসলামও প্রতিষ্ঠিত হবে না। অপরদিকে মানব
রচিত ব্যবস্থার ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত সমাজ ও রাষ্ট্রে বসবাস করা কালীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বোমাবাজি এবং সশস্ত্র
সংগ্রাম আল্লাহ প্রদত্ত্ব জীবন ব্যবস্থা ইসলাম-এর বিধানেরই সুস্পষ্ট লংঘণ, যা মূলতঃ চরম অপরাধ এবং আল্লাহর রাসূল হযরত
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নীতি ও আদর্শ বিরোধী। এ পথেও আল্লাহর রহমত ও বিশেষ সাহায্য আসবে না
আসতে পারে না, ফলে ইসলামও প্রতিষ্ঠিত হবে না। সুতরাং এ দুটোর কোনটাই ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নয়। এ দুটোই মূলতঃ ভ্রান্ত
পথ। একমাত্র আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রদর্শিত পথেই আল্লাহর রহমত এবং তাঁর
বিশেষ সাহায্য আসবে, ফলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনেরই ইচ্ছায় সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং আল্লাহর রাসূল
হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রদর্শিত পথই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি। তাই
ইসলামী সমাজ দলমত নির্বিশেষে সকলকে সকল প্রকার ভ্রান্ত পথ ত্যাগ করে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঈমানী দায়িত্ব পালনের আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে।